কিভাবে বাংলাদেশে থেকেই ব্যারিস্টার হওয়া যায়

কিভাবে বাংলাদেশে থেকেই ব্যারিস্টার হওয়া যায়??

1715_10154018397458185_7014457976691953472_n (4).jpg
অনেকেই ইনবক্সসহ বিভিন্নভাবে ব্যারিস্টারি কীভাবে করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান। তাদের কথা মাথায় রেখেই ব্যারিস্টারি বিষয়ে বিস্তারিত এই পোস্টটি করা। তাই অনুরোধ থাকবে পড়া শেষে ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যকেও জানার সুযোগ দিন।- এডমিন
উত্তরঃ-
ব্যারিস্টার হতে চান?
ব্যারিস্টার অ্যাট ল-র সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে বার অ্যাট ল। একজন ব্যারিস্টার হিসেবে স্বীকৃত হওয়ার জন্য ৯ মাসের একটি বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্স (বিপিটিসি) করতে হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের আইনজীবীদের বলা হয় অ্যাডভোকেট। আমেরিকাতে আইনজীবীকে বলা হয় অ্যাটর্নি। তেমনি করে অস্ট্রেলিয়ার আইনজীবীকে বলা হয় ব্যারিস্টার। এভাবে বিভিন্ন দেশে আইনজীবীকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। আমাদের ঔপনিবেশক দেশ যুক্তরাজ্য হবার কারণে এবং স্বাধীন বাংলাদেশ সত্ত্বেও ঔপনিবেশক মন স্বাধীন না হবার কারণে বাংলাদেশে ব্যারিস্টারকে অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখা হয়।
যোগ্যতাঃ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ওপর অনার্স ও মাস্টার্স করেও কেউ সরাসরি ইংল্যান্ডে প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন না। অর্থাৎ ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের অধিভুক্ত কিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ যদি অনার্স পাস করে তবে তাকে বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সে ভর্তি হতে হলে আবার নতুন করে কোনো ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে এলএলবি বা এলএলএম পাস করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে মাস্টার্স ডিগ্রিধারীরা একটা বিশেষ সুবিধা পান, তা হলো – তাদের অনার্সের মোট ১২টি বিষয়ের মধ্যে তিনটি বিষয় কম পড়লেই চলে। 
এ কোর্সে প্রতিবছরই পাঁচ হাজারের মতো আবেদন জমা পড়ে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, ব্যক্তিগত দক্ষতা, ভাষার দখল, সাংগঠনিক দক্ষতা এসব বিষয় বিবেচনায় এনে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়। সম্প্রতি আইইএলটিএস স্কোরও দেখা হচ্ছে। আবেদনের ক্ষেত্রে স্কোর ৭.৫ বাধ্যতামূলক হলেও অনেক ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়।
দেশে বসেই ইংল্যান্ডের ডিগ্রিঃ
আমাদের দেশে ব্রিটিশ স্কুল অব ল, লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ, ভূঁইয়া একাডেমী, নিউ ক্যাসেল ল একাডেমী এই চারটি টিউশন সার্ভিস প্রোভাইডার বার অ্যাট ল পড়ালেখার বিষয়ে সহযোগিতা করে থাকে।
এইচএসসি বা সমমানের ডিগ্রিধারী যে কেউ ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত তিন-চার বছর মেয়াদি এলএলবি অনার্স কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি মিলে জিপিও-৫ থাকতে হবে। ভর্তির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো বয়সসীমা নেই। শিক্ষার্থীরা ইংল্যান্ডের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে ও একই সময়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকেন। পরীক্ষা নেওয়া হয় ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে। ইংল্যান্ডেই এসব উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়। এভাবে দেশে বসেই ইংল্যান্ডের ডিগ্রি পেতে পারেন। এলএলবি করার পর ইংল্যান্ডে সরাসরি বার ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তি হওয়া যাবে।
ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন আর ইউনিভার্সিটি অব নর্দামব্রিয়া দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে ব্রিটিশ ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ দেয়। তবে ঘরে বসে ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে আইন বিষয়ে অনার্স করা গেলেও নয় মাসের বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সের জন্য ইংল্যান্ডে যেতেই হবে।
কোথায় পড়বেন?
বার অ্যাট ল কোর্সটি ইংল্যান্ডের চারটি ইন’স-এর যেকোনো একটি থেকে করতে হয়। অর্থাৎ লিন্কনস্ ইন, গ্রেইস ইন, ইনার টেম্পল ও মিডল টেম্পল এই চারটি ইন’স এর মধ্যে যেকোনো একটি আপনাকে বেছে নিতে হবে।
সনদ ইন থেকে দেওয়া হলেও কোনো একটি ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়াশোনা করতে হয়। ইন’স অব কোর্ট, স্কুল অব ল, কলেজ অব ল, বিপিপি ল স্কুল, নটিংহ্যাম, নর্দামব্রিয়া, ব্রিস্টল, কার্ডিফ, ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটন এই ৯টি প্রতিষ্ঠানে বার অ্যাট ল করা যায়। এর যেকোনো একটিতে পড়তে পারেন। সাধারণত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বার অ্যাট ল কোর্সে ভর্তি করা হয়।
খরচাপাতিঃ
ব্যারিস্টারি পড়া বেশ ব্যয়বহুল। প্রতিবছরই এ খরচ বাড়ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভেদে টিউশন ফি কিছুটা কম-বেশি হয়ে থাকে। ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি (অনার্স) ডিগ্রিটা যদি ঘরে বসে নিতে চান, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি ও বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি বাবদ কমপক্ষে ১৯ থেকে ২০ লাখ টাকা লাগবে। ইংল্যান্ডে গিয়ে নিতে চাইলে শুধু টিউশন ফি বাবদ লাগবে ২৬ থেকে ৫৬ লাখ।
বার ভোকেশনাল কোর্সের বর্তমান টিউশন ফি ৯ থেকে ১৫ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশি টাকায় এ ফি ১০ থেকে ১৬ লাখ টাকা। বার অ্যাট ল কোর্সটির মেয়াদ ৯ মাস হলেও এটি শেষ করতে এক বছর লেগে যায়। তাই এর টিউশন ফির সঙ্গে এক বছরের থাকা-খাওয়ার খরচ হিসাব করতে হবে। এ খরচ নির্ভর করে জীবনযাত্রার ওপর। এই এক বছরে থাকা-খাওয়া বাবদ পাঁচ থেকে আট লাখ টাকা গুনতে হবে।
Bar at Law সম্পন্ন করতে সম্ভাব্য ব্যয় হতে পারে ৬৩ লাখ থেকে এক কোটি টাকার মতো।
খণ্ডকালীন কাজের সুযোগঃ
ইংল্যান্ডে যাঁরা ব্যারিস্টারি পড়তে যান, পড়াশোনার পাশাপাশি তাঁদের খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ রয়েছে। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রছাত্রীরা নতুন নিয়মে সপ্তাহে ১০ ঘণ্টা কাজ করতে পারেন। যদিও এ সময় পড়ার চাপে খণ্ডকালীন কাজ করা যায় না। বার অ্যাট ল করার সময় প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়। তাই সুযোগ থাকলেও খণ্ডকালীন কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, কেউ যদি ব্যারিস্টারি ডিগ্রি অর্জন করে বাংলাদেশে আইন পেশায় নিয়োজিত হতে চায় সেক্ষেত্রে তাকে বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় পাশ করে সনদ নিতে হবে। এর আগে যদি কেউ ব্যারিস্টারি ডিগ্রি অর্জন করত, সে সরাসরি বাংলাদেশে আইন পেশায় নিয়োজিত হতে পারত। কিন্তু এখন সেই নিয়মের পরিবর্তন করা হয়েছে। বাংলাদেশে গ্র্যাজুয়েশন কোর্স করা যায় এমন দুটি প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা দেওয়া হলো-
Bhuiyan Academy
House No. 13, Road No. 7, Dhanmondi R/A
Dhaka-1205, Bangladesh
Mobile: 01713039970, Phone : 8613658
London Law Tutorial
House-14 (3rd Floor), Road-7 (Orchard Point Market)
Dhanmondi R/A, Dhaka-1205

No comments

Powered by Blogger.