History of Sultan Murad Khan 17th ottoman sultan by Suhanur Rahaman
sultan murad khan(by suhanur rahaman) |
সুলতান মুরাদ ১৬১২ সালে জন্মগ্রহন করেন।
উনার পিতার নাম সুলতান আহমেদ খান।
এবং মায়ের নাম কোসেম সুলতান।
সুলতান মুরাদ খান চতুর্থ মুরাদ হিসেবেও সুপরিচিত।
সুলতান মুরাদের সিংহাসনে বসার পথ ছিল খুব কন্টকাকীর্ন।
ছোট বয়সে নিজ চোখের সামনে জেনিচারিরা তার বড় ভাই,১৬ তম সুলতান দ্বিতীয় সুলতান উসমানকে হত্যার ঘটন প্রত্যক্ষ করেন।এর পর থেকে এক অজানা ভয় সবসময় উনাকে তারা করে বেরাতো।
উসমানকে হত্যার পর সুলতান মোস্তফা সিং হাসনে বসেন। যিনি সুলতান মুরাদের চাচা ছিলেন।
সেই অস্থির সময়ে মা কোসেম সুলতানের দৃঢ়তায়, সুলতান মুস্তফাকে বন্দী,এবং তার মা ,বোন, ভগ্নীপতি, বিভিন্ন পাশা এবং জেনিচারি সৈন্য যারা উসমান হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল,তাদেরকে হত্যা করার মাধ্যমে মাত্র ১১ বছর বয়সে ১৬২৩সালে চতুর্থ মুরাদ সিংহাসনে আরোহনে করেন।
অল্প বয়সে ক্ষমতা পেলেও মূল ক্ষমতা ছিল উনার মা কোসেম সুলতানের হাতে।
১৬২৩ থেকে ১৬৩২ পর্যন্ত উনি ছিলেণ অনেকটা পুতুল সম্রাট।
এই সময়ে সম্রাজ্য পরিচালনাকারি প্রশাসন থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই অনিয়ম, বিশৃংখলা এবং দুর্নীতি ব্যাপক আকার লাভ করে
১৬৩২ থেকে তিনি তার মা কোসেম সুলতানকে সম্রাজ্যের নায়েবের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেন।
এবং নতুণ করে সিঙ্ঘাসনে অভিষেক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই ভার্তা দেন যে, তিনি সম্রাজ্যের একক পরিচালক।
তিনি এও ঘোষনা করেন, সম্রাজ্যে বিশৃংখলা তৈরী করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।
প্রচন্ড পরিমান রাগী ছিলেণ সুলতান মুরাদ।
তিনি ইস্তাম্বুলে কফি, তামাক, মদ নিষিদ্ধ করেন।
এবং আদেশ অমান্যকারীদের মৃত্যুদন্ডের ঘোষনা দেন।
রাষ্ট্রীয় কাজে সকল প্রকার দুর্নীতি কঠোর হাতে দমন করেন।
তিনি চাইতেণ যে তার আদেশ কেউ অমান্য করবে না।
তিনিই হচ্ছেন প্রথম উসমানীয় খলীফা যিনি একজন শায়খুল হাদীসকে ফাসির হুকম দেন।
এই কারনে ইসলামপন্থী অনেকেই উনাকে কাফের বলে থাকেন।
প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করায় তিনি শায়খুল হাদীস আইজাদা এফেন্দিকে ফাসির হুকুম দেন।
তিনি যখন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন, তখন গোটা সম্রাজ্য ছিল শৃংখলাহীন।সৈন্যদের মধ্যে অনেকেই ছিল বিদ্রোহি,
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য এই সমস্ত বিদ্রোহীদের অধিকাংশকেই তিনি নিজ হাতে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড দিতেন।কাউকে কাউকে হত্যা করে জনসম্মুখে ঝুলিয়ে রাখতেন।
তিনি তার চার ভাই শাহাজাদা বায়জিদ, শাহাজাদা সুলেইমান,শাহাজাদা সেলিম এবং শাহাজাদা কাসিম
কেও মৃত্যুদন্ড দেন।
পাশাপাশি তার চাচা সুলতান মুস্তফাকে ভগ্নিপতিকেও ফাসির আদেশ দেন ।
বলা হয়ে থাকে তিনি সুলতান সুলেমানের পিতা সেলিম দ্য গ্রিমের শোষণের প্রতিদ্ন্দ্তা করে তার সেরগ্লিও প্যালেসের কাছে পানি দিয়ে একটি কিয়স্কে বসতেন এবং প্রাসাদের কাছ দিয়ে কোনও নৌকায় বা নৌকার মাঝিদের গুলি করতেন, যা সম্ভবত খেলাধুলার জন্য করতেন।
কাটাতার প্রোডাকশন চ্যানেলটিতে আপলোড হও য়া ভিডিওতে সুলতান মুরাদের রাগী স্বভাবের সমালোচনা করতে গিয়ে অনেকি উনাকে,
.........।। ...। ...বলেণ।
হ্যা এটা সত্যি যে তিনি নিজের ক্রোধকে দক্ষতার সংগে সামলাতে পারেননি। তবুও তিনি প্রজাদের একটা অংশের আকুন্ঠ সমর্থন পেয়েছিলেন।
তিনি ততকালীন সাফাবিদ যা পারস্য বা বর্তমানে ইরান নামে পরিচিত , এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং আজারবাইজান,তাবরীজ, হামাদান এবং১৬৩৮সালে বাগদাদ বিজয় করেন।এবং একটি চুক্তি করেন ।চুক্তি অনুযায়ী পূর্ব আর্মেনিয়া , পূর্ব জর্জিয়া, আজারবাইজান,এবং দাগিস্তান পারস্যের দখলে থাকবে এবং পশ্চিম আর্মেনিয়া, পশ্চিম জর্জিয়া উসমানীয়দের দখলে থাকবে। বাগদাদ দখলের সময়, চল্লিশ দিন টানা লড়াই চললেও উসমানীয়দের কাছে আত্মসমর্পন করতে বাদ্য হয়। একটি কথা বলতেই হয়,সুলতান মুরাদের দৃষ্টিভংগি ছিল বাঘের মত ক্ষিপ্র। যুদ্ধের সময় তিনি সর্বদা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতেন এবং সম্মুখ সমরে সরাসরি অংশ নিতেন।
বাগদাদ অভিযানের সময় মোঘল সম্রাট শাহজাহানের রাষ্ট্রদূত মীর জারিফ এবং মীর বারাকা সুলতান মুরাদের সাথে দেখা করেন, উপহার হিসেবে ১০০০ নকশীকাজ করা দামী কাপড় এবং বর্ম পেশ করেন।খলিফা মুরাদ ও তাদেরকে উন্নতমানের অস্ত্র এবং কাফতান উপহার দেন।
তিনি স্থানীয় নির্মানশৈলীতে ১৬৩৫ সালে বাগদাদ কিয়স্ক এবং ১৬৩৮ সালে রিবান কিয়স্ক নির্মান করেন ।খলিফা মুরাদ মায়দান মসজিদ ,মাদ্রাসা,কোনিয়াতে সারাফাতদ্বিন মসজিদ এছাড়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন।
খলিফা মুরাদের বিবাহিত জীবন সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি, তবে অধিকাংশ ইতিহাসবিদ আয়েশা সুলতানার কথা উল্লেখ করেন, এছাড়া সেনেভবের হাতুন সম্পর্কেও জানা যায় যে তিনি একজন হাসেকি ছিলেন।
ফারিয়ে সুলতান সুলতান মুরাদের বৈধ,বিবাহিত স্ত্রী ছিলেন।
সুলতান মুরাদের তিনটি কন্যাসন্তান এবং একাধিক শাহাজাদা জন্ম দেন। এর মধ্যে শাহাজাদা আহমেদ,শাহাজাদা নুমান, শাহাজাদা ওরহান, শাহাজাদা হাসান, মুহাম্মদ, উসমান,আলাউদ্দিন সেলিম, এবং শাহাজাদা মাহমুদ ।
এই সকল শাহাজাদা ,প্রত্যেকেই খলিফা মুরাদের মৃত্যুর পূর্বেই মারা যান এবং
মেয়েদের মধ্যে কায়া সুলতান, সাফিয়ে সুলতান, এবং রুকাইয় সুলতান এর নাম শোনা যায়।
এই মহান খলিফা ১৬৪০ সালে মাত্র ২৭বছর বয়সে ছারহছিসে আক্রান্ত হয়ে পরলোক গমন করেন।
কথিত আছে, সুলতান মুরাদ মৃত্যুশয্যায় তার ছোট ভাই ইব্রাহিমের মৃত্যুর আদেশ দেন, যদিও তা পালন করা হয়নি।আল্লাহ তাকে জান্নাৎ দান করুন।
জনপ্রিয় ড্রামা সিরিয়াল সুলতান সুলেমান কোসেমে, চতুর্থ মুরাদের শিশু চরিত্রে অভিনয় করে কাগান এফে এক এবং সুলতান চরিত্রে অভিনয় করেন মতিন একদুলগার।
একটি কথা বলতেই হয়, ইতিহাস আশ্রিত নাটক বা ড্রামা সিরিয়াল,প্রকৃত পক্ষে ইতিহাস নয়। তবে ইতিহাসকে কেন্দ্র করে এর গল্প বিভিন্ন দিকে আবর্তিত হয়।
মুহতেশিম ইয়ুজিল কোসেম বা সুলতান সুলেমান কোসেম সিরিয়াল টিও ইতিহাস নয়। তবে ইতিহাসের অনেক সত্য উপাদান এতে যেমনিভাবে উপস্থিত তেমনি ভাবে এই সিরিয়ালটিতে অনেক অসত্য তথ্য ও সন্নেবেশিত হয়েছে, যা শুধুমাত্র গল্পের প্রয়োজনে করা হয়েছে।তবে মূল ইতিহাস প্রায় একই,
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ ভিডিওটি শেষপর্যন্ত দেখার জন্য। আইন ও ইতিহাস সম্পর্কিত ভিডিও পেতে youtube এ কাটাতার প্রোডাকশন চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন, ভাল লাগলে বন্ধু এবং প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন,
এবং অনুপ্রেরনা দিতে পারেন ভিডিওটিতে একটি লাইক দিতে পারেন।
No comments